রমজান মাসে হাই প্রেসার রোগীর খাদ্য তালিকা
আসসালামু আলাইকুম বন্ধুরা, আশা করি আপনারা সবাই আল্লাহর অশেষ রহমতে ভালো আছেন। সবাইকে পবিত্র মাহে রমজানের শুভেচ্ছা। রমজান মাস আসলেই আমাদের প্রত্যেকের খাদ্য তালিকায় কিছু না কিছু পরিবর্তন আসে। এজন্য শুধু ওষুধ নয়, ভরসা রাখুন বিশেষ খাবারের ডায়েট লিস্টের উপরও।
বিশেষত যারা ডায়বেটিস ও হাই প্রেসারে ভুগছেন তাদের অনেক সমস্যা হয়। তাদের মনে একটাই প্রশ্ন থাকে যে রমজান মাসে কোন খাদ্য তালিকা মেনে চললে ডায়বেটিস এবং হাই প্রেসার নিয়ন্ত্রণে থাকবে। আজকে আমরা রমজান মাসে হাই প্রেসার রোগীর খাদ্য তালিকা কি ধরনের হওয়া উচিত তা নিয়ে কথা বলব। ধৈর্য্য সহকারে পোস্টটি পড়তে থাকুন।
রমজান মাসে হাই প্রেসার রোগীর খাদ্য তালিকা
১. জবা ফুলের চা
° জবা ফুলের চা। হ্যাঁ, জবা ফুলের চা কারণ এতে এমন এন্টি ইনফ্লেমেটরি উপাদান রয়েছে যা নিমিষেই হাই প্রেসার বা উচ্চ রক্ত চাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। কারণ জবা ফুলের চা ব্লাড ভেসেল এর কর্মক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি আমাদের শরীরের মধ্যে থাকা খারাপ কলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে বিশেষ সহায়ক। যার ফলে আমাদের ব্রেইন এবং হার্ট সুস্থ থাকে।
জবা ফুলের চা বানানোর নিয়ম
দুই কাপ পানিতে তিনটি জবা ফুলের শুধু পাপড়িগুলো ছিড়ে ২ থেকে ৩ মিনিট ফুটিয়ে নিন। ফুটিয়ে নেয়ার পর ছাকনি দিয়ে ছেকে নিন। যদি আপনার ডায়াবেটিস না থেকে থাকে তাহলে এতে মধু দিয়েও খেতে পারেন।
২. টক দই
° ঘরোয়া পদ্ধতিতে তৈরি টক দই ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণে ইনস্ট্যান্ট কাজ করে থাকে। কারণ এটি ফ্যাট বিহীন ও এতে চিনি থাকে না। যাদের হাই প্রেসার আছে তারা ঘরেই টক দই বানিয়ে খেতে পারেন এতে হাই ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণ থাকবে। তাছাড়া টক দই ব্যাকটেরিয়াল ল্যাপটসকে ভেঙে ল্যাকটিক এসিড তৈরি করে। তবে এটি দুপুরে খাবার পর ১০০ গ্রাম করে খেলে ভালো হয়। আর আলাদা করে কোন প্রকার চিনি ও লবণ না মেশানোই ভালো।
৩. মেথি-র পানি
° মেথি ভিজানো পানি উচ্চ রক্ত চাপ নিয়ন্ত্রণে অনেক কার্যকরী কারন মেথি-র পানিতে রয়েছে প্রচুর পরিমানে ফাইবার। যেটি উচ্চ রক্ত চাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
মেথির পানি খাওয়ার নিয়ম
প্রতিদিন রাতে এক কাপ পানিতে এক চামচ মেথি ভিজিয়ে রাখুন। তারপর সকালে উষ্ণ এক গ্লাস পানি পান করে ভেজানো মেথি চিবিয়ে খান এবং মেথি ভেজানো পানিও পান করুন। প্রতিদিন এভাবে মেথি খেলে হাই ব্লাড প্রেসার ছাড়াও আরও অন্যান্য অনেক অসুখ সেরে যাবে।
৪. অ্যাপল সিডার ভিনেগার
° অ্যাপল সিডার ভিনেগার হাই ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণে সহায্য করে থাকে। এই ভিনেগারে থাকা পটাশিয়াম শরীর থেকে অতিরিক্ত সোডিয়াম ও টক্সিক বের করে দেয়। এবং এতে উপস্থিত রেনিন এনজাইম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে।
আপেল সিডার ভিনেগার খাওয়ার নিয়ম
হাই ব্লাড প্রেসার কমাতে এক গ্লাস উষ্ণ পানিতে ২ চামচ আপেল সিডার ভিনেগার মিশিয়ে রাতে খাবার আধ ঘন্টা পূর্বে পান করুন। আপেল সিডার ভিনেগার কিনার সময় দেখে নিবেন এতে ৫% এসিডিটি আছে কিনা।
৫.কাঁচা রসুন
° কাঁচা রসুন হাই ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে থাকে।
৬. পাকা কলা ও ডার্ক চকলেট
°পাকা কলা ও ডার্ক চকলেটও হাই ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। যখন আপানার ব্লাড প্রেসার বেরে যাবে তখনি পাকা কলা অথবা ডার্ক চকলেট খেতে পারেন। এতে করে তৎক্ষনাৎ আপনার ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণে আসবে ইনশাআল্লাহ।
৭. লেবুর পানি
° লেবুর পানিও হাই প্রেসার নিয়ন্ত্রণ করড়। আমাদের প্রত্যেকের বাসায় কম বেশি লেবু থাকে আর এই লেবু হাই ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণে খুব সাহায্য করে।
এছাড়াও ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে রমজান মাসে আপনার খাবারের তালিকায় রাখুন জাম, বিট, কুমড়ার বীজ ও রসুন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই চারটি খাবারই একসঙ্গে ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সক্ষম।
শেষ কথাঃ
আশা করি আপনাদের রমজান মাসে হাই প্রেসার রোগীর খাদ্য তালিকা নিয়ে এই পোস্টটি ভালো লাগবে। কারন রমজান মাসে আমরা অনেকেই সঠিক খাদ্য তালিকা করতে না পারায় অনেক সমস্যার সম্মুখীন হই। আর যারা বিভিন্ন রোগে ভুগছেন তাদেরতো আরও অনেক সমস্যা। তাই উপরের বলা খাবার তালিকা নিয়মিত মেনে চললে আপনাদের যাদের হাই ব্লাড প্রেসারের সমস্যা তাদের প্রেসার নিয়ন্ত্রণে থাকবে ইনশাআল্লাহ। ধন্যবাদ সবাইকে।